Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

অহিমায়িত ঘরে আলু সংরক্ষণ

নাহিদ বিন রফিক

আলু বাংলাদেশের প্রধান সবজি। খাদ্যশস্যের তালিকায় দ্বিতীয়। বিশে^র সেরা উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে আমাদের অবস্থান সপ্তমে।  আমরা যেমন ভাত খাই, তেমনি পৃথিবীর ৪০টি দেশের লোকেরা আলু খায়। অথচ কেউ কেউ মনে করেন, আলুর পুষ্টিমান খুব কম এবং এতে ভুঁড়ি বাড়ে। আসলেই এ ধারণাটি ভুল। কারণ, পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, আলুতে ভিটামিন-এ ও     ভিটামিন-সি রয়েছে। কিন্তু চালে তা মোটেও নেই। এছাড়া শর্করা, আমিষ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি তো আছেই। অপরদিকে চর্বির পরিমাণ চালের তুলনায় অনেক কম এবং আটার মাত্র এক পঞ্চমাংশ। তাই এর ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসও বাড়াতে হবে সমান তালে। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ১ কোটি  ৩ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন  হয়েছিল। খাবার হিসেবে আমাদের চাহিদার পরিমাণ ৬০-৭০ লাখ মেট্রিক টন। আর বীজ হিসেবে প্রয়োজন প্রায় সাড়ে সাত লাখ মেট্রিক টন। বাকি আলু রফতানি হচ্ছে বিদেশে। আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবারের ফলনও বেশ ভালো। তাই চলতি বছরে উৎপাদন আশানুরূপ হবে। এখন ভরা মৌসুম। দামও একটু কম। কেজিপ্রতি দর ১৮ টাকা। যদিও মাসখানিক আগে দাম ছিল ১৪-১৫ টাকা। যেহেতু অধিকাংশ কৃষক আলু সংগ্রহের পরপরই বাজারে বিক্রি করে দেন। তখন স্বাভাবিকভাবেই বাজারমূল্য কম থাকে। ফলে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এ থেকে পরিত্রাণের উপায়ও আছে। এজন্য দরকার সংরক্ষণের ব্যবস্থা। দীর্ঘ সময় আলু রাখার জন্য একমাত্র উপায় হিমাগার। এজন্য ব্যয় কম হলেও বস্তাপ্রতি ৩০০ টাকা। এছাড়া প্রায় ৩৫০ হিমাগারে দেশের মোট আলু রাখার জায়গাও হবে না। তাই সাধ্য না থাকায় কেউ কেউ খাটের নিচে কিংবা ঘরের কোনো স্থানের মেঝেতে আলু স্তূপ করে রাখেন। সঠিক পদ্ধতি না জানার কারণে এসব আলুর শতকরা ২০-৩০ ভাগ নষ্ট হয়ে যায়। অথচ সনাতন পদ্ধতি ব্যবহার করে আলু সংরক্ষণ করা সম্ভব। এজন্য খরচও হবে কম। বস্তাপ্রতি ৩০-৩৫ টাকা। এক বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি ‘অহিমায়িত ঘর’ ব্যবহারের মাধ্যমেও আলু গুদামজাত করা যায়। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উদ্যোগে এর উদ্ভাবন।
ছায়াযুক্ত স্থানে মাচার ওপর নির্মিত এ ঘরের ছাউনি হবে টিনের এবং চারদিকে থাকবে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা। এক শতাংশ জমিতে বিস্তৃত ঘরের ধারণক্ষমতা     ১৪-১৬ টন। অবশ্য ঘরের    দৈর্ঘ্য-প্রস্থ আলুর পরিমাণের ওপর নির্ভর করবে। একা সম্ভব না হলে কয়েকজন মিলেও তৈরি করা যেতে পারে। এভাবে সংরক্ষণ করলে ফড়িয়াদের দৌরত্ম্য বিদায় হবে। কৃষক হবেন লাভবান। মুখে ফুটবে হাসি। ‘পানির দামে আলু, চাষির মাথায় হাত’ এ ধরনের সংবাদ কোনো পত্রিকায় আর শিরোনাম হবে না। তাই সেসব সহজ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া দরকার।
আলু সংরক্ষণের পূর্বশর্ত হচ্ছে সঠিক সময়ে সংগ্রহ। পরিপক্ব হলেই তুলতে হবে। এজন্য ৭-৮ দিন আগে গোড়া থেকে গাছ কেটে ফেলা দরকার। বৃষ্টি কিংবা মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় আলু তুলতে মানা। প্রখর রোদেও ঠিক নয়। এতে ব্যাকহার্ট রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সকালবেলা উত্তম। লাঙল কিংবা কোদালে আলু কেটে না যায়, সেদিক অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে। তোলা শেষে বস্তাভরে দ্রæত বাড়ি নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো কারণে জমিতে রাখতেই যদি হয়, তাহলে ছায়াযুক্ত স্থানে বিছিয়ে শুকনো খড়-কুটা কিংবা পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। বস্তায় ঢুকানোর সময় আলু যেন আঘাতপ্রাপ্ত না হয়, সেজন্য প্লাস্টিকের পাত্র ব্যবহার করা উত্তম। বাড়িতে এনে স্বাভাবিক বাতাস চলাচল করে, এমন শুকনো এবং ছায়াযুক্ত স্থানে রাখা দরকার। রাখার সময় বেশি উঁচু থেকে ফেলা যাবে না।
আলুর ছাল শক্তকরণের জন্য ঘরের খোলামেলা ঠাÐা জায়গা নির্বাচন করতে হয়। মেঝেতে চট বিছিয়ে ১ ফুট পরিমাণ উঁচু করে আলুর স্তূপাকারে রাখতে হয়। এর ওপরে পাতলা কাগজ দিয়ে ৫-৭ দিন ঢেকে রাখতে হবে। তাহলেই ছাল শক্ত হয়ে যাবে। নাড়াচাড়ায় ক্ষতির আশঙ্কা থাকবে না। পাশাপাশি গায়ে ক্ষত থাকলে তা সেরে যাবে। পোকার আক্রমণ হতেও পাবে রক্ষা। সংরক্ষণের পূর্বে খুব ছোট, আঘাতপ্রাপ্ত, কাটা, ফাটা, ক্ষত, সবুজ বর্ণ এবং রোগ পোকায় আক্রান্ত আলুগুলো বাদ দিয়ে ছোট, মাঝারি এবং বড় আকারের আলু আলাদাভাবে নির্বাচন করতে হয়। আগেই ছায়াতে শুকিয়ে দিতে হবে। একটুও ভেজা থাকা চলবে না।
আলুর শ^াস-প্রশ^াস এবং বায়ু চলাচল উপযোগী করে ঘর তৈরি করতে হবে। খড়-কুটা, ছন, গোলপাতা এসবের ছাউনি এবং বাঁশের চাটাইয়ের বেড়ার এ ঘরটি মাটি থেকে একটু উঁচুতে মাঁচা তৈরি করে দিতে হয়। এর ওপর স্তূপ করে আলু সংরক্ষণ করতে হবে। প্রতি স্তূপের উচ্চতা সর্বোচ্চ ১ মিটার এবং প্রশস্ত হবে ২ মিটার। তাক বানিয়েও আলু রাখা যায়। বাঁশ বা বেতের ঝুড়ি, ডোল এসবেও রাখা যাবে। নিজেদের থাকার ঘরে মাচায় বা তাক বানিয়ে, এমনকি চৌকির নিচে শুকনো বালুর ওপর আলু রাখা যাবে।
পোকার আক্রমণ হতে রক্ষা পেতে নিম, নিশিন্দা,      বিষকাটালির শুকনো পাতা গুঁড়া করে স্তূপে ভালোভাবে মিশিয়ে দিতে হবে। কোনো কীটনাশক নয়। প্রতি ১৫ দিন পরপর আলুর অবস্থা দেখে নিতে হবে। দুর্গন্ধ বের হলে বুঝতে হবে আলুর পচন ধরেছে। পচা আলু সরিয়ে ফেলতে হবে। এর আশপাশের ভেজা আলু হালকা রোদে শুকিয়ে     পুনরায় গুদামজাত করতে হবে। ইঁদুর কিংবা অন্য কোনো ক্ষতিকর প্রাণীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলে, এদের দমন ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।
এছাড়া রোগ কিংবা পোকায় আক্রান্ত আলু দেখামাত্র সরিয়ে ফেলতে হবে। মাঝে মাঝে আলু ওপরে-নিচে উল্টেপাল্টে দিতে হয়।
মেধা, অর্থ ও শ্রমের বিনিময়ে কৃষক আলু উৎপাদন করেন। আর তা যদি সংরক্ষণের অভাবে লোকসান গুনতে হয়, তখন তাদের কষ্টের সীমা থাকে না। তবে আগ্রহ এবং কৌশল জানা থাকলে এনে দিতে পারে এর সঠিক সমাধান। অত্যন্ত সহজ এ পদ্ধতিতে ৪ মাস পর্যন্ত আলু রাখা সম্ভব। য়
টেকনিক্যাল পার্টিসিপেন্ট, কৃষি তথ্য সার্ভিস, বরিশাল; মোবাইল নম্বর: ০১৭১৫৪৫২০২৬ ; ই. মেইল:tpnahid@gmail.com

 

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon